হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ:
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং-শামলাপুর যাতায়তের একমাত্র রাস্তাটি বর্তমানে মারাত্নকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ৬ কিলোমিটারের এ গুরুত্বপুর্ণ সড়কটি পুরোটাই ভেঙ্গে খান খান এবং খানা-খন্দকে একাকার। গর্তগুলো মিনি কুয়ায় পরিণত হয়েছে। গর্তে প্রায় সময় যাবাহন আটকে পড়ে। এতে সর্বসাধারণের ভোগান্তির অন্ত থাকেনা।
জানা যায়, বৃটিশ আমল থেকেই এ সড়কটি চালু রয়েছে। হোয়াইক্যং এবং বাহারছড়া ২ ইউনিয়নের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়তের একমাত্র রাস্তা হচ্ছে সড়কটি। ঐতিহাসিক এ সড়কের জনগুরুত্ব বিবেচনায় সরকার কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন করেছিল। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং স্টেশনের পশ্চিমে আলহাজ্ব আলী-আছিয়া হাইস্কুল এবং বন বিভাগের রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে থেকে পশ্চিম দিকে উপকুলীয় বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর বাজারে গিয়ে পৌঁছেছে সড়কটি। হোয়াইক্যং এবং বাহারছড়া ২ ইউনিয়নের সংযোগ ছাড়াও কিংবদন্তীর কুদুম গুহা, চাকমা পল্লী, হরি খোলা, দৈংগাকাটা, লাতুরী খোলা, জুয়ারী খোলা, লম্বা খোলা, মনখালী ফরেস্ট রেস্ট হাউস, শামলাপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, শামলাপুর হাইস্কুল, শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্প, শামলাপুর আছারবনিয়া নতুন স্থাপিত ‘মোআস’ হাসপাতালে যাতায়তের অন্যতম হচ্ছে এ সড়ক। সাধারণ যাতায়ত ছাড়াও এ সড়ক দিয়ে জরুরী রুগী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থী-পরিক্ষার্থী এবং উৎপাদিত পণ্য পান, সুপারি, সব্জী-তরিতরকারী, আহরিত মাছ পরিবহণ, বন বিভাগ ও আইন শৃংখলা বাহিনীর আসা-যাওয়া করেন। উপরন্ত সম্প্রতি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারী, পুলিশ, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, র‌্যাব, সেনা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, পদস্থ আমলা, মন্ত্রী, ভিআইপিদের আনাগোনা বেড়েছে। কিন্ত অতি গুরুত্বপুর্ণ সড়কটির দৈন্য দশা সর্বমহলকেই চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে পুরো সড়ক জুড়েই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ভালভাবে সংস্কার না হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে খন্ড খন্ড হয়ে পড়েছে প্রাচীন রাস্তাটি। যথা নিয়মে সংষ্কার করা না হওয়ায় বছর না যেতেই গুরুত্বপূর্ণ হোয়াইক্যং-শাপলাপুর সড়কটি খন্ড খন্ড ভেঙ্গে গেছে। জরুরী ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কার না করলে অবশিষ্ট অংশও ভেঙ্গে বিলীন হয়ে যাওয়ার অংশকা করেছেন স্থানীয়রা।
বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের বাসিন্দা টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক আলহাজ্ব মাওঃ রফিক উদ্দিন বলেন ‘অতি গুরুত্বপুর্ণ হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কে যথাযথ সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের শুরু থেকে শেষ মাথা পর্যন্ত ভাঙ্গা আর ভাঙ্গা। স্থানীয় বাসিন্দাগণ অভিযোগ করেছেন রাস্তার কাজ সঠিক ভাবে না হওয়ায় এভাবে ভাঙ্গছে’। হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওঃ নূর আহমদ আনোয়ারী এবং বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওঃ আজিজ উদ্দিন বলেন ‘রোহিঙ্গাদের জন্য গাড়ী চলাচল বেশি হওয়ায় এবং প্রবল বৃষ্টি কারণে রাস্তা অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে ছোটখাট যানবাহন চলাচল করলেও সড়কটির অধিক ঝুঁকিপুর্ণ স্থানে গাইডওয়াল দিয়ে সংস্কার করা না হলে জনগুরুত্বপুর্ণ সড়কটি বিলীন হওয়ার আংশকা রয়েছে’।