ইমরান হোসাইন, পেকুয়া:

পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের সোনালী বাজার গণপাঠশালা ও পেকুয়ার চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিরাজ করছে করুণ অবস্থা। স্কুল দু’টি হচ্ছে ২০১৩সালে সরকারীকরণ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৭৫সালে প্রতিষ্টিত পেকুয়ার চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০১৩সালে সরকারীকরণ হয় সোনালী বাজার গণপাঠশালা। পেকুয়ার চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২জন আর সোনালী বাজার গণপাঠশালায় রয়েছে ৩জন শিক্ষক।

সোমবার (২৩অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে স্কুল দুটিতে গিয়ে দেখা যায়, ভবন যেমন ঝুঁকিপূর্ণ তেমনি শিক্ষার্থীর সংখ্যাও খুবই নগণ্য। স্কুলের শিক্ষক সংকট ও ঝুঁকিপূর্ন ভবন মেরামতের জন্য শিক্ষা দপ্তর বরাবরে বারবার ধরনা দিয়েও কোন ধরণের সুরহা হচ্ছেনা। এ স্কুলগুলোতে কর্তৃপক্ষের তদারকি নাই বললে চলে। এছাড়াও জাতীয় পতাকার অবমাননার চিত্র ধরা পড়েছে গণপাঠশালায়।

স্থানীয়রা আরো জানান, ২০১৩সালে সোনালী বাজার গণপাঠশালটি সরকারীকরণ হওয়ার আগে শতাধিক শিক্ষাথী নিয়ে একটি এনজিও সংস্থা স্কুলটি চালাত। শিক্ষার কার্যক্রম চলত একটি পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ন ভবনে। ২০১৩ সালে স্কুলটি সরকারীকরণ হলে হতবাক হয়ে যান স্থানীয় সুশীল সমাজ ও শিক্ষানুরাগীরা। তার পার্শ্বে আরেকটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বিদ্যমান থাকায় পেকুয়া শিক্ষা অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে গণপাঠশালাটি সরকারীকরণ হওয়ায় সে সময় শিক্ষা মন্ত্রানালয় বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন স্থানীয়রা। সেটিরও কোন ধরণের সুরহা হয়নি বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে পেকুয়ার চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে রয়েছে ৩টি রুম। ৩টি রুমেই চলে ১ম থেকে ৫ম শ্রেনীর লেখাপড়া। রুমের ভিতরে রযেছে বড়বড় গর্ত। আসবাপপত্রের অবস্থাও করুণ। আসবাপপত্রের অভাবে একটি রুমের মাঠিতে বসে লেখাপড়া করছে শিক্ষার্থীরা। পার্শ্ববর্তি পরিত্যক্ত একটি ভবনে রয়েছে শিক্ষকদের জন্য আলাদা একটি রুম। সেই রুমটির অবস্থাও খুবই ভয়াবহ। যেকোন মূহর্তে ভেঙ্গে পড়ে হতাহতের আশংকা রয়েছে। রুম মেরামতের জন্য প্রধান শিক্ষক নিজেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করলেও কোন ধরণের সহযোগিতা করেনি।

সরেজমিন গিয়ে গণপাঠশালায় শিক্ষক ফেরদৌসি আকতার ও হামিদা বেগমকে পাওয়া গেলেও প্রধান শিক্ষক রেহেলা বেগমকে পাওয়া যায়নি। ছিলনা কোন শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা কোথায় প্রশ্ন করলে শিক্ষক ফেরদৌসি আকতার বলেন তাদেরকে দুপুরের খাওয়ার জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে।

প্রধান শিক্ষকের সাথে মোঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্কুলের কাজে তিনি উপজেলায় রয়েছেন। তার স্কুলে জাতীয় পতাকার এ অবস্থা কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, দপ্তরি না থাকায় দেখভাল করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাৎক্ষনিক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মোঠোফোনে কয়েকবার কল দিলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।

পেকুয়ার চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, অপর একজন শিক্ষক অসুস্থতার কারণে স্কুলে আসতে পারেনি। একটি লিখিত আবেদন এ প্রতিবেদকের হাতে দিয়ে তিনি বলেন, কক্ষ মেরামতের জন্য লিখিত আবেদন করা হয়েছে গত ২৬ জুলাই। আবেদনটি পেয়ে দেখতেও আসেন নাই । শিক্ষক সংকটের বিষয়টি জানালো হলেও কোন সুরহা হয়নি। এছাড়াও কক্ষের অভাবে শিক্ষকেরাও ঝুঁকিপূর্ন ভবনে অবস্থান করেন।