নিউজ ডেস্ক:

যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রোহিঙ্গা সংকটে আবার বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেছে। সংকটের দায় কেবল দরিদ্র বাংলাদেশের ওপর না চাপিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। অ্যামনেস্টির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করা হয়।
২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনযজ্ঞ শুরু করে দেশটির সামরিক বাহিনী। সেনাবাহিনীর হত্যা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচতে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি সাউথ এশিয়ার পরিচালক ওমর ওয়ারাচ মন্তব্য করেন, দরিদ্র দেশ হয়েও বাংলাদেশ অসাধারণ উদারতা দেখিয়েছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার দায়িত্ব তাদের একার ওপর চাপানো যাবে না।

রাখাইনে কোনো আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাকেও প্রবেশ করতে দিচ্ছে না মিয়ানমার সরকার। অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার জাতিসংঘের জেনেভা কার্যালয়ে দাতা দেশগুলোর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে দাতাদের। ওই বরাদ্দ বাংলাদেশের কক্সবাজারে স্রোতের মতো ধেয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় ব্যবহার করা হবে।
ওমর ওয়ারাচ বলেন, ‘এটি এমন এক অবিচ্ছিন্ন সংকট, যার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে অবিলম্বে সুসংহত প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন। এর অর্থ এই যে, আরও অনেক দেশকে (বিশেষ করে যারা ওই অঞ্চলের) বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে হবে এবং দায়িত্বের বোঝা ভাগ করে নিতে হবে।’
‘মাই ওয়ার্ল্ড ইজ ফিনিশড : রোহিঙ্গা টার্গেটেড ইন ক্রাইমস অ্যাগেইনস্ট হিউমিনিটি ইন মিয়ানমার’ শীর্ষক ৪৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি বলেছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শত শত শিশু, নারী ও পুরুষকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। রাখাইন থেকে তাদের উৎখাত করতে ধারাবাহিকভাবে নির্বিচার হত্যাকা-, নৃশংস ধর্ষণ ও গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর সুনির্দিষ্ট ইউনিটের বিরুদ্ধে এমন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ তুলেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
অ্যামনেস্টির আশঙ্কা, এসব অপরাধ রোহিঙ্গাদের উগ্রপন্থায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি। অভিযুক্তদের বিচার ও সেনাবাহিনীর ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জোরদারেরও সুপারিশ করে এ সংস্থা।