সিবিএন:
কম সময়ে ৫ জন পবিত্র কুরআনে হাফেজের তালিকায় স্থান পেয়েছে কক্সবাজারের বিস্ময়কর বালক ইয়াসিন আরাফাত। সে একমাত্র হাফেজে কুরআন যে মাত্র ৮৬ দিনে ৩০ পারা মুখস্ত করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। যা সত্যিই বিস্ময়করও বটে।
ইয়াসিন ছাড়া বাকী হাফেজরা হলেন- মিশরের শরীফ মুসতফা, উত্তর নাইজেরিয়ার মুহাম্মদ শামসুদ্দিন আলিয়্যু, ঢাকার আদিবা তাসনিম এবং আয়েশা সিদ্দিকা সুহাইমা।
৮৬ দিনে কুরআনের হাফেজ:
ইয়াসিন আরাফাত খান। বয়য় সাড়ে ১১ বছর।মাত্র দুই মাস ২৬ দিনে পূর্ণ হাফেজ হয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে কক্সবাজারের শিশু ইয়াসিন আরাফাত খান। মাত্র সাড়ে ১১ বছর বয়সী ইয়াসিন আরাফাত দৈনিক ৭ পৃষ্ঠা কুরআন মুখস্ত করেছে। হাফেজদের মতে, পূর্ণাঙ্গ কুরআন মুখস্ত করতে একজন মানুষের স্বাভাবিকভাবে সময় লাগে ৬ মাস। কিছু কিছু শিশু সাড়ে চার থেকে ৫ মাসেও এটি স¤পন্ন করতে পারে। কিন্তু মাত্র দুই মাস ২৬ দিনে পবিত্র কুরআন আয়ত্ব করে হাফেজ হওয়ার নজির চলতি সময়ে নেই বললেই চলে। তাই ইয়াসিনের এ অর্জন বিশ্বের নতুন বিস্ময়। সে তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদরাসা কক্সবাজার শাখার ষষ্ট শ্রেনীর ছাত্র।
শুধু কুরআনে নয়, ক্রিড়া-সাংস্কৃতিতেও নৈপূণ্যতা দেখিয়েছে মাত্র ৮৬ দিনের কুরআনে হাফেজ ইয়াসিন আরাফাত। সহপাঠিদের পেছনে ফেলে প্রাতিষ্ঠানিক বার্ষিক প্রতিযোগিতায় ইসলামী সংগিতে ১ম, ঝুড়িতে বল নিক্ষেপে ১ম এবং কবিতা আবৃত্তিতে দ্বিতীয় স্থান করেছে।
হাফেজ ইয়াসিন জাতীয় দৈনিক নয়াদিগন্তের কক্সবাজার (দক্ষিণ) সংবাদদাতা গোলাম আজম খানের কনিষ্ট ছেলে। তার মা সালমা খাতুন একজন স্বার্থক গৃহিনী। দাদা মরহুম মাস্টার ইছহাক টেকনাফের সুপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন। নানা আলহাজ্ব ছালেহ আহমদ সৌদিআরবের একজন প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী। তার স্থায়ী নিবাস টেকনাফের হ্নীলা নয়াবাজার এলাকায়। বর্তমানে স্বপরিবারে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড সমিতিপাড়ায় থাকে।
৩ মাসে ৩০ পারা কোরআন মুখস্ত:
বালকটির নাম শরীফ মুসতফা। বয়স যখন ৭ তখন থেকেই অলৌকিক ঘটনা ঘটে তার জীবনে। মিসরের এই বালক মাত্র তিন মাসে পবিত্র কোরআনের ৩০ পারা মুখস্ত করে ফেলেন। এছাড়া মাত্র ৪০ দিনে বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফসহ আরও কয়েকটি হাদীসের প্রামাণ্য গ্রন্থের ১১ হাজার হাদীসও মুখস্ত করের তিনি। আরবী ব্যাকরণ শাস্ত্রের জটিল কিছু গ্রন্থ তুহফাতুল আতফাল, মাতনুল জাযরী, শাতেবী, দুররাহ, আলফিয়া ইবনে মালিকও সে তার ভেতর আয়ত্ত করে নেয়। সে মুখস্ত করে পবিত্র কোরআনের বৃহৎ তাফসীর তাফসীরে জালালাইনের প্রতিটি লাইন ও শব্দ। শিশুটি শুধু এক কেরাতে নয়, পুরো কোরআন শরীফকে ১০টি কেরাতে পড়ার পদ্ধতি আয়ত্ত করে ফেলেছে মাত্র ৬ মাসে।
৬ বছরের আদিবা ৭ মাসেই হাফেজ:
মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় হিফজ পড়ছে আদিবা তাসনিম। সাড়ে ৬ বছর বয়সেই ত্রিশ পাড়ার পুরো কুরআন মুখস্ত করেছে। পুরো কুরআন হিফজ করতে ওর লেগেছে মাত্র ৭ মাস। যেখানে পূর্ণ বয়সের ছেলেদের সর্বনি¤œ ২ বছর লেগে যায়।
তিন বছরেই কুরআনে হাফেজ:
প্রবল মেধা ও মুখস্থ শক্তির অধিকারী এক বালক মাত্র তিন বছর বয়সেই পবিত্র কুরআনুল কারিম মুখস্থ করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। উত্তর নাইজেরিয়ার জারিয়া শহরের বাসিন্দা সে। তাঁর নাম মুহাম্মদ শামসুদ্দিন আলিয়্যু। সে আন্তর্জাতিক কুরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অ্যাঙ্গো আবদুল্লাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল-এর ছাত্র। আন্তর্জাতিক কুরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অ্যাঙ্গো আবদুল্লাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল-এ ভর্তি হয়ে মাত্র দেড় বছরেরও কম সময়ে সে কুরআনুল কারিম মুখস্ত করে, যা তাঁর প্রখর মেধার পরিচয় বহন করে। ক্ষুদে হাফেজ মুহাম্মদ শামসুদ্দিন আলিয়্যুর বাবা এ কুরআন শিক্ষার স্কুলটির প্রধান।
৬ বছর ৮ মাসেই হাফেজ সুহাইমা:
মাত্র ৭ বছরেরও কম বয়সে পবিত্র কুরআনুল কারিম হিফজ স¤পন্ন করেছে শিশু আয়েশা সিদ্দিকা সুহাইমা। হাফেজ আয়িশা সিদ্দিকা সুহাইমার বয়স মাত্র ৬ বছর ৮ মাস। হাফেজা আয়িশা সিদ্দিকা সুহাইমার পিতা-মাতার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান রাজধানীর টিকাটুলীর মারকাজুল হাফেজা ইন্টারন্যাশনালের ছাত্রী ছিল সে। পিতার মাতার নিবিড় তত্ত্বাবধানে অল্প বয়সেই পবিত্র কুরআন হিফজ করতে সক্ষম হয় সে।