ডেস্ক নিউজ:
দেশে মোট বাড়ির ৮১ শতাংশই গ্রামে। এর মধ্যে আবার ৮০ শতাংশই নিম্ন মানের। যদিও মোট জনসংখ্যার ৭২ ভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। তবে এবার গ্রামে বসবাসকারীদের জন্য সহজ শর্তে এপার্টমেন্ট (বাড়ি) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত নগরের দরিদ্রদের জন্য গৃহায়নে অর্থায়ন বিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, অপরিকল্পিত বাড়ি নির্মাণ ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিন ২৩৫ হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। এ জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে যেখানেই বাড়ি হোক না কেন তার জন্য অনুমতি লাগবে। অনুমতি ছাড়া বাড়ি নির্মাণ কোনোভাবেই করা যাবে না। এ সংক্রান্ত নগর অঞ্চল পরিকল্পনা আইন শিগগিরই বাস্তবায়ন হবে।

মন্ত্রী বলেন, শহরে বস্তি পালে মাস্তানরা। বস্তিতে বসবাস করতে হলে মাস্তানদের টাকা দিতে হয়। বস্তি বাসীরা বিদ্যুৎ সংযোগ নেয় ঘুষ দিয়ে, আবার বিলও দেয়। পানির সংযোগ পেতে ঘুষ দেয়, কিন্তু বিলও দেয়। কিন্তু তাদের বসবাস খুব নিম্ন মানের। টয়লেট সুবিধা নেই। কষ্ট করে খারাপ অবস্থায় তারা থাকে।

বস্তিবাসীদেরর জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ৭ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে। আরও ১০ হাজার নির্মাণ করা হবে। আমরা গরিব মানুষকে মাত্র ৩০০ টাকা দৈনিক কিস্তিতে ফ্ল্যাট দেব।

এনজিওদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা কমিউনিটি বিল্ড করেন। আমরা ন্যাশনাল হাউজিংয়ের আওতায় ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দেব। এনজিওদের সঙ্গে কাজ করব। রাজধানীর অন্যান্য সিটিতে সরকারি খাস জমি দিলে আমরা গৃহ নির্মাণ করে দেব, টাকা লাগবে না।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের নগর উন্নয়ন কর্মসূচি দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে। সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, নগর উন্নয়ন অধিদফতর, মিউনিসিপ্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ম্যাব), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউ অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।

অনুষ্ঠানে নগর দরিদ্রদের আবাসন সঙ্কট মোকাবেলার লক্ষ্যে তৈরি ব্র্যাকের কমিউনিটি লিড হাউজিং মডেল, ইউএনডিপির ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের লো-ইনকাম হাউজিং মডেল তুলে ধরে আলোচনা করা হয়। দরিদ্র্যবান্ধব নগর পরিকল্পনা ও নগর -দরিদ্রদের গৃহায়ন ঋণের জন্য সরকারি-বেসরকারিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অংশীদারিত্ব জোরদারকরণ এবং মেয়র ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ নগর উন্নয়ন সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে দেশের সবগুলো সিটি কর্পোরেশনসহ প্রায় ৭৫ জন পৌর মেয়র এবং ইউএনডিপি ও বেসরকারি সংস্থা, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ের আরও তিন শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।