নুরুল কবির, বান্দরবান:

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত সহিংসতার হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে সুপেয় পানি এবং স্যানিটেশন নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহন করেছে সরকার।বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার নানা স্থানে আশ্রিত রোহিঙ্গা আবাসন কেন্দ্র সমূহে এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডাঃ অংশৈ প্রু মার্মা এবং জেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সোহরাব হোসেন।

জানা গেছে, গত ২৫ আগষ্ট থেকে শুরু করে প্রায় ১ মাস যাবত মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা পাহাড়, ঝিরি, সড়কের পাশের রাস্তা দখল করে ঝুপড়িতে অবস্থান করছিল। পানি এবং স্যানিটেশনের ব্যবস্থা না থাকায় রোহিঙ্গারা দূষিত পানি পান করে নানা রকম অসূখে আক্রান্ত হয়ে পড়ে এবং খোলা পরিবেশে যেখানে সেখানে মল-মুত্র ত্যাগ করায় চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।এতে পরিবেশের উপর প্রচন্ড চাপ পড়ায় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে সীমিত ভাবে টিউব ওয়েল ও টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়। এতে পরিবেশের কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে।এবং রোগবালাই ও অনেকটা কমে গেছে।বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম অস্থায়ী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা আসমা আক্তার বলেন, এতোদিন আমরা দূষিত পানি পান করতাম ও খোলা জায়গায় টয়লেট করতাম তাই আমরা অনেক ধরনের রোগে আক্রান্ত হতাম কিন্তু এখন রোগ বালাই অনেকটা কমে গেছে। শরনার্থী শিবিরে সরকারের পক্ষ থেকে পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থা করে দেওয়ায় খুশি রোহিঙ্গারাও, জানিয়েছেন অপর রোহিঙ্গা আলীম উদ্দীন।তিনি বলেন আগে আমরা খোলা জায়গায় পায়খানা করতাম এবং ঝিরির পানি পান করতাম এখন সরকার আমাদের জন্য টিউবওয়েল ও টয়লেট এর ব্যবস্থা করেছে তাই আমরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। এদিকে রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচাতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ২টি ইউনিয়নে ৫টি অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজারের কুতুপালং ও বালুখালী এলাকায় ১২’শ নলকুপ ১২’শ ৬০টি টয়লেট স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।যা সাড়ে ৪ থেকে ৫ লক্ষ মানুষের জন্য অপ্রতুল। তবে প্রকল্প পরিচালক এহতেশামুল রাসেল খান জানান, সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য ১৪ হাজার পারমান্যান্ট শ্যালটার নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছে সেখানে তাদের জন্য পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থাও থাকবে। বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন নতুন আসা ৫ লক্ষ রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রতি ৪১৬ জনের জন্য বরাদ্দ হচ্ছে একটি টিউব ওয়েল ও একটি ল্যাট্রিন।যা ৬০ ভাগ শিশুসহ বিশাল এই জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্য সেবা ঠিক রাখতে খুব কষ্টসাধ্য।তবে সঙ্কট মোকাবেলায় সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এবং বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।