অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করছে মিয়ানমার সরকার। বৃহস্পতিবার দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে এমন কথা বলেন দেশটির কার্যত নেত্রি অং সান সুচি। তার ওই রাষ্ট্র পরিচালিত টিভি চ্যানেলে সরাসরি প্রচার করা হয়। তার ওই ভাষণে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ইস্যু ছাড়াও দেশবাসীকে এক হওয়ার আহবান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া রাখাইন রাজ্যের সহিংসতা নিয়েও কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, রাখাইনে সকল আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সহায়তার বিষয় দেখভালের জন্যে তিনি একটি কমিটি গঠন করেছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। খবরে বলা হয়, সুচি তার ভাষণে স্বীকার করেন, তার দেশ রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিশ্বব্যাপি সমালোচনার শিকার হচ্ছে। এই সমস্যা সামলাতে তিনি দেশবাসীকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে পুনর্বাসন নিয়ে তার সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করছে। মূলত আলোচনার বিষয় হচ্ছে, শরণার্থীদের মধ্যে কাদেরকে ফেরত নেয়া হবে। এ বিষয়ে বিস্তৃতভাবে তেমন কিছু জানান নি সুচি। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, ফেরত যেতে ইচ্ছুক শরনার্থীদেরকে তাদের আবাসন সম্পর্কিত নথিপত্র দেখাতে হবে। তবে পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, বেশিরভাগ রোহিঙ্গা শরণার্থীর কাছেই এরকম নথিপত্র নেই। রাখাইনের সহিংসতা থেকে প্রাণ নিয়ে বাচার তাগিদে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে বেশিরভাগই তা ফেলেই পালিয়েছেন।
মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দাই বৌদ্ধ ধর্মালম্বী। তারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের মিয়ানমারের আদি কোন জাতিগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অনিচ্ছুক। এমনকি তাদেরকে রোহিঙ্গা বলে স্বীকৃতি দিতেও অনিচ্ছুক। তাদের ভাষ্যমতে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে পালিয়ে যাওয়া অবৈধ বাঙ্গালি অভিবাসী। রোহিঙ্গাদের ডাকাও হয় বাঙালি বলে। মিয়ানমার সেনাপ্রধান সম্প্রতি তার ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভ’মিতে ফিরে যাচ্ছে। এখানে তিনি রোহিঙ্গাদের বাঙালি বলে উল্লেখ করেন। আর মাতৃভ’মি বলতে বাংলাদেশের দিকে ইঙ্গিত করেন। এমনকি সুচিও তার ভাষণে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দের ব্যবহার করেন নি। যদিও অন্যান্য ছোট জাতিগোষ্ঠীগুলোকে তাদের নিজ নিজ নাম ধরেই উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের দেয়া তথ্য অনুসারে, ২৫শে আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৫ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে।