হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ:
হ্নীলা জামিয়া দারুসসুন্নাহ আবারও সাফল্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখেছে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও বৃত্তি পরিক্ষায় অংশ নিয়ে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে আসছে দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীণতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্টান স্থাপিত (১৯২৭ খৃস্টাব্দ) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুসসুন্নাহ। শুধু তাই নয়, আলহাজ্ব মাওঃ মুফতী আলী আহমদ ভারপ্রাপ্ত মুহতমিমের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর শুভাকাংখী, মজলিশে শুরার সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, এলাকাবাসী, সকল শিক্ষকগণের আন্তরিক প্রচেষ্টায় জামিয়ার শিক্ষা-দীক্ষা ও আর্থিকভাবে অগ্রগতি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

১৫ জানুয়ারী টেকনাফের হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়া স্টেশন মাঠে অনুষ্টিত হয় কাঞ্জরপাড়া জমিয়তুল হুফ্ফাজ ফাউন্ডেশনের হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা। টেকনাফ এবং উখিয়া উপজেলার ৪০টি হেফজখানা থেকে ৪৬ জন হাফেজ শিক্ষার্থী অংশ নেন। এতে হ্নীলা জামিয়া দারুসসুন্নাহ হেফজ বিভাগের ছাত্র হ্নীলা পশ্চিম সিকদারপাড়ার মোঃ সেলিম ও ফরিদা বেগমের পুত্র এহসান উল্লাহ চ্যাম্পিয়ান ১ম স্থান এবং হ্নীলা পশ্চিম সিকদারপাড়ার মাওঃ আমির হোছাইন ও সাবেকুন্নাহারের পুত্র আবদুল আজিজ ৫ম স্থান লাভ করেন। চট্রগ্রাম সিএসসিআর ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ জামাল আহমদ অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

এদিকে ২০১৭ সালে নুরানী একাডেমীর ২০ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক সমাপণী পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ৭ জন জিপিএ-৫ এবং শতভাগ পাসসহ উপজেলার শীর্ষে রয়েছে। পুরো উপজেলায় ইবতেদায়ী সমাপণী পরিক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৯ জন। তম্মধ্যে ৭ জনই হ্নীলা শাহ আবুল মঞ্জুর (রাহঃ) নুরানী একাডেমীর শিক্ষার্থী। হ্নীলা গুলফরাজ-হাশেম বৃত্তি পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ৬ জনই ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী বৃত্তি লাভ করে। ১৮ ডিসেম্বর লেদা ইবনে আব্বাস (রাঃ) মাদ্রাসায় অনুষ্টিত হয়েছিল হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কতৃক আয়োজিত হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা। এতে অংশ নিয়ে ৬০ জন প্রতিযোগির মধ্যে জামিয়া দারুসসুন্নাহ হেফজ বিভাগের ছাত্র এহছান উল্লাহ (১২) প্রথম স্থান লাভ করে।

এছাড়া তাহফিজুল কুরআন সংস্থার তত্বাবধানে অনুষ্টিত হেফজ সমাপ্তকারী ছাত্রদের কেন্দ্রীয় পরিক্ষায় টেকনাফের হ্নীলা জামিয়া দারুসসুন্নাহ ৩০ বছরের রেকর্ড অতিক্রম করে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে। বাংলাদেশ তাহফিজুল কুরআন সংস্থার প্রধান কার্যালয় চট্রগ্রামের পটিয়া আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়ায় এ পরিক্ষা অনুষ্টিত হয়েছিল এ পরিক্ষা। এতে সমগ্র বাংলাদেশ থেকে ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। উক্ত পরিক্ষায় টেকনাফের হ্নীলা জামিয়া দারুসসুন্নাহ’র হেফজ বিভাগের হেফজ সমাপ্তকারী ১১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। সকলেই উচ্চ মানের মার্ক পেয়ে পাস এবং ২ জন সম্মিলিত মেধা তালিকায় স্থান লাভ করে।

জামিয়া দারুসসুন্নাহ’র ভারপ্রাপ্ত মুহতমিম আলহাজ্ব মাওঃ মুফতী আলী আহমদ এ জন্য মহান আল্লাহু তা’য়ালার শুকরিয়া, জামিয়ার সকল শিক্ষক বিশেষতঃ নুরানী ও হেফজ বিভাগের শিক্ষকগণের পরিশ্রম এবং পরিচালনা কমিটির সম্মানীত সদস্যবৃন্দের আন্তরিকতা ও দুয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন ‘আমি একজন নগন্য খাদেম। আগামীতে জামিয়ার শিক্ষার্থীরা আরও বেশী বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে এবং আর্থিক ও শিক্ষা-চরিত্রের উন্নয়নে সর্বমহলের আন্তরিক দু’য়া ও সহযোগিতা কামনা করেছি’।

উল্লেখ্য, হ্নীলা জামিয়া দারুসসুন্নাহ’র হেফজ বিভাগে বর্তমানে ৫ জন শিক্ষক কর্মরত এবং ১১১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষকবৃন্দরা হলেন হাফেজ মাওঃ শব্বির আহমদ, হাফেজ মাওঃ মোহাম্মদ শরীফ, হাফেজ মাওঃ আরিফ উল্লাহ, হাফেজ মাওঃ আবদুর রহীম, হাফেজ মাওঃ শাহজাহান।