বিদেশ ডেস্ক:

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত লর্ড আহমেদ বলেছেন, বার্মায় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে সংঘটিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং যৌন সহিংসতার খবর খুবই বিরক্তিকর। সেখানে খুন, ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোতে এসব অপরাধের প্রামাণ্য দলিল উঠে এসেছে। এগুলো পরিষ্কার মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অবিলম্বে এটা থামাতে হবে। এসব ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথবিষয়ক দফতরের প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ একইসঙ্গে জাতিসংঘ ও কমনওয়েলথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সংঘাতে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধবিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মঙ্গলবার ব্রিটিশ সরকারের দাফতরিক ওয়েবসাইটে তার এ বক্তব্য প্রকাশিত হয়।

লর্ড আহমেদ বলেন, পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথবিষয়ক দফতরের সংঘাতে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধবিষয়ক টিমের প্রধান জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংঘাতকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি সেখানে বেঁচে যাওয়া মানুষজন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। যৌন সহিংসতায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে আমরা শিগগিরই বাংলাদেশে দুই জন বিশেষজ্ঞ পাঠাবো। তারা এই ঘৃণ্য অপরাধ সম্পর্কে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করবেন।

এদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও দেশটির উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের জাতিগত নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে কথা বলতে আগামী সপ্তাহে পাঁচ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ঢাকায় আসছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে কক্সবাজার যাওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া, দুজনের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর বৈঠক হতে পারে।

আগামী ২০ ও ২১ নভেম্বর মিয়ানমারে অনুষ্ঠেয় আসেম সম্মেলনের আগে তারা বাংলাদেশে এ সফরে আসছেন। তাদের মধ্যে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগট ওয়ালস্টার ১৮ নভেম্বর এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফেদেরিকো মঘেরিনি ও জাপানের পররাষ্ট্রন্ত্রী তারো কোনো ১৯ নভেম্বর ঢাকায় আসবেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে কক্সবাজার যেতে পারেন। চীন ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। পরে মাহমুদ আলীসহ সফরকারী পাঁচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা থেকে আসেম সম্মেলনে যোগ দিতে মিয়ানমার যাবেন।

উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারে সেনা অভিযান জোরদার হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। এর আগে গত অক্টোবর থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৯০ হাজার এবং আশির দশক থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরও প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা আছে বাংলাদেশে।